সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচালিত নিরীক্ষা (অডিট) কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিতে চান না অনেক কর্মকর্তা। অনেক ক্ষেত্রেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের যেসব অডিট আপত্তি ওঠে, মন্ত্রণালয়গুলো তার জবাব এড়িয়ে যায়। মহাহিসাব নিরীক্ষকের (সিএজি) কার্যালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, বর্তমান আইন অনুযায়ী অনিয়মের কোনো আপত্তি উঠলে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাব দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যে কোনো জবাব আসে না। যে কারণে জবাব ছাড়াই নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। এতে করে প্রতিবেদনগুলো অর্থবহ হয় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, নানা কারণে অডিট আপত্তিগুলোর নিষ্পত্তি হয় না। বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে ঘাটতি মন্ত্রণালয় ও অডিট বিভাগ দুই পক্ষেরই থাকে। তিনি মনে করেন সমন্বয় সভাগুলো ঠিকমতো হলে অনেক আপত্তিই নিষ্পত্তি হয়ে যায়। অডিটে অসহযোগিতা এবং আরও বেশ কিছু জটিলতার কথা মাথায় রেখে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১২ সালে অডিট আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় সিএজি অফিস। প্রস্তাবিত এ আইন দুই বছর ধরে ঝুলে আছে। নবম সংসদেই আইনটি উত্থাপন করার কথা থাকলেও হয়নি। এটি এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।
সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আইনটি ঝুলে থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। গত সংসদে আইনটি উত্থাপন করার কথা থাকলেও কেন আইনটি আটকে আছে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তবে আর্থিক খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও নিশ্চিত করার জন্য আইনটি খুবই জরুরি।' সংবিধানের ১২৭ থেকে ১৩২ অনুচ্ছেদের আলোকেই সিএজি তথা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংবিধানের ১২৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'মহা-হিসাব-নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারী কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীর সরকারী হিসাব নিরীক্ষা করিবেন ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দান করিবেন এবং সেই উদ্দেশ্যে তিনি কিংবা সেই প্রয়োজনে তাঁহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত যে কোন ব্যক্তির দখলভুক্ত সকল নথি, বহি, রসিদ, দলিল, নগদ অর্থ, স্ট্যাম্প, জামিন, ভান্ডার বা অন্য প্রকার সরকারী সম্পত্তি পরীক্ষার অধিকারী হইবেন।' কিন্তু এ ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন নিরীক্ষকরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পান না বলে জানান তাঁরা।
সিএজি অফিসের প্রস্তুত করা নিরীক্ষা প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে ওই প্রতিবেদনটি যায় সরকারি হিসাব-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে। সংসদীয় কমিটি অডিট আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি করে থাকে। কমিটিতে শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে হয়। প্রস্তাবিত অডিট আইনে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকছে। এ আইনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। যদি জবাব না পাওয়া যায়, তাহলে ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান অসহযোগিতাকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। না হলে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সরকারি হিসাব-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির কাছে রিপোর্ট দিতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইনটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে আইনের খসড়ায় কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা আছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই প্রস্তাবিত আইনটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রণজিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনসহ নানা কারণে দেরি হয়েছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনটি দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এর অনুমোদন দেওয়া হবে।'
সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আইনটি ঝুলে থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। গত সংসদে আইনটি উত্থাপন করার কথা থাকলেও কেন আইনটি আটকে আছে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। তবে আর্থিক খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও নিশ্চিত করার জন্য আইনটি খুবই জরুরি।' সংবিধানের ১২৭ থেকে ১৩২ অনুচ্ছেদের আলোকেই সিএজি তথা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংবিধানের ১২৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'মহা-হিসাব-নিরীক্ষক প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব এবং সকল আদালত, সরকারী কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীর সরকারী হিসাব নিরীক্ষা করিবেন ও অনুরূপ হিসাব সম্পর্কে রিপোর্ট দান করিবেন এবং সেই উদ্দেশ্যে তিনি কিংবা সেই প্রয়োজনে তাঁহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত যে কোন ব্যক্তির দখলভুক্ত সকল নথি, বহি, রসিদ, দলিল, নগদ অর্থ, স্ট্যাম্প, জামিন, ভান্ডার বা অন্য প্রকার সরকারী সম্পত্তি পরীক্ষার অধিকারী হইবেন।' কিন্তু এ ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন নিরীক্ষকরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পান না বলে জানান তাঁরা।
সিএজি অফিসের প্রস্তুত করা নিরীক্ষা প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে ওই প্রতিবেদনটি যায় সরকারি হিসাব-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে। সংসদীয় কমিটি অডিট আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি করে থাকে। কমিটিতে শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে হয়। প্রস্তাবিত অডিট আইনে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকছে। এ আইনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। যদি জবাব না পাওয়া যায়, তাহলে ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান অসহযোগিতাকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। না হলে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সরকারি হিসাব-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির কাছে রিপোর্ট দিতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইনটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে আইনের খসড়ায় কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা আছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই প্রস্তাবিত আইনটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রণজিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনসহ নানা কারণে দেরি হয়েছে। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনটি দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এর অনুমোদন দেওয়া হবে।'
0 comments:
Post a Comment